Hot Posts

6/recent/ticker-posts

ধূমপানের দশটি ভয়াবহ ক্ষতি||Top 10 Terrible Things Smoking

ধূমপান মানুষের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতি কর ও বিপদজনক। ধূমপানে নিকোটিন সহ ৫৬ টি বিষাক্ত পদার্থ বিরাজমান। ধূমপানে ধূমপায়ী সহ আশেপাশের সকল মানুষের জন্য ক্ষতিকর।শিশুরা পরোক্ষ ধূমপানের কারনে নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত  হয়ে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে। পরোক্ষ ধূমপানের কারনে হ্দ রোগ, ফুসফুস ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ ও দেখা দেয়।  গবেষণায় দেখা যায় পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাবফেলে। 


আজকে আপনাদের সাথে ধূমপানের দশটি ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করব।

১০/ চোখের ক্ষতি

  চিকিৎসকরা বলছেন, , দীর্ঘদিন ধরে যারা বিড়ি বা সিগারেট খান বা তামাক জাতীয় দ্রব্যের নেশা করেন, তাদের চোখে ছানি পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এমনকি ৫-১০ বছর বা তার বেশি ধরে যারা ধূমপান করছেন বা তামাকজাত দ্রব্য খাচ্ছেন তাদের চোখের স্নায়ুর ক্ষতি হয়ে অন্ধত্ব পর্যন্ত  বরণ করতে পারেন।

ধূমপান দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা বা ঘোলা হয়ে যেতে ভূমিকা রাখে। 



ধূমপান ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়ে জটিলতার সৃষ্টি করে যা চোখের রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে ব্যক্তি অন্ধ হয়ে যেতে পারে


প্রাইমারি ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে যা চোখকে অন্ধ করে দিতে পারে।


সিগারেটের ধোঁয়া চোখকে শুষ্ক করে দেয়। এর ফলে চোখ জ্বালাপোড়া করে ও চুলকায়।

ধূমপান করলে কন্ট্যাক্ট লেন্স পড়তে আপনি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। এর ফলে কর্নিয়াল আলসারেশন হয়ে আপনি অন্ধও হয়ে যেতে পারেন।


অর্থাৎ  দেখা যাচ্ছে, ধূমপানের ক্ষতি করার সর্বশেষ পর্যায় হচ্ছে চোখের অন্ধত্ব।



৯/ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

 

 বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন, তামাক সেবনকারীরা বা ধূমপায়ীরা নানারকম জটিল ও কঠিন রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে বিধায় কভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির ঝুঁকিতে সবার উপর অবস্থান করছে।


 ধূমপায়ীদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্তের আশঙ্কাও অনেক বেশি। তা ছাড়া, ধূমপান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমেই কমাতে থাকে এবং সহজেই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এমনকি অকাল মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে। 


৮/চেহারায় প্রভাব-


 ধূমপানের ফলে চেহারা বুড়িয়ে যেতে পারে তাড়াতাড়ি। অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে আপনাকে বয়সের তুলনায় বেশি বয়স্ক দেখা দিতে পারে। কারণ, ধূমপান বলিরেখা তৈরির ক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন প্রভাব রাখে।

ধূমপানের কারণে বাড়তে পারে স্ট্রেচ মার্ক। নিকোটিন ত্বকের কানেক্টিভ টিস্যু ও ফাইভার-এর ক্ষতি করে দেয়। ফলে সাদা স্ট্রেচ মার্ক দেখা দিতে পারে।সাথে চুল পড়া তো আছে ই।


৭/ধূমপান এবং নারীর মা হওয়ার ক্ষমতা 


যেসব নারীরা ধূমপান করেন তাদের গর্ভধারণে অধূমপায়ী নারীদের চেয়ে বেশি সমস্যা হয়। এমনকি তিনি নিজে ধূমপান না করলেও, তার চারপাশে যদি সারাক্ষণ কেউ ধূমপান করে, তা নিজে ধূমপান করার মতোই ক্ষতিকর।


ধূমপান নারীদেহে যেসব ক্ষতি করে:


# ডিম্বানুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে


# অধূমপায়ীদের তুলনায় আগে মেনোপজ হয়ে যায়


# গর্ভনালীর (ফেলোপিয়ান টিউব) আকার পাল্টে যায় এবং কার্যক্ষমতা কমে যায়


# সঠিক জায়গায় ভ্রূণের নিজেকে স্থাপন করার ক্ষমতা কমে যায়।


 গর্ভাবস্থায় নানা জটিলতার শিকার হতে হয় তাদের।


এমনকি বন্ধ্যাত্বের জন্য প্রচলিত  চিকিৎসাও ঠিকমতো কাজ করতে পারে না ধূমপানের অভ্যাসের কারণে।


ধূমপান এবং পুরুষের বাবা হওয়ার ক্ষমতা


পুরুষদের ক্ষেত্রে ধূমপান যা করতে পারে:


# শুক্রাণুর গুণগত মান নষ্ট করে,


# শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়


# শুক্রাণুর গতি ও কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়


# শুক্রাণুর আকার বদলে যায়

 ধূমপায়ীদের ইরেকটাইল ডিসফাংসান হতে পারে যা তাদের বাবা হওয়া কে আরও কঠিন করে তুলে।


৬/হাড়ের ক্ষতি ঃ


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপানের কারণে তরুণদের হাড়ের ঘনত্বের কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যার ফলাফল হতে পারে অস্টিওপরোসিস।

ধূমপান হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ফলাফল, অল্প বয়সেই হাড়ক্ষয় রোগ হয়।


স্কুল-কলেজে পড়ার সময়ে অনেকের ধূমপানের বদোভ্যাস গড়ে ওঠে, যেসময় হাড় উন্নয়নশীল অবস্থায় থাকে। শরীরের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি শোষণ প্রক্রিয়াতে কুপ্রভাব ফেলে ধূমপান।


ডাক্তারদের মতে, “হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই ক্ষয়পূরণ হতে অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের সময় বেশি লাগে, বাড়ে জটিলতা বৃদ্ধির ঝুঁকিও।”

৫/দাঁত মাড়ি সহ মুখের নানা ক্ষতি

দাঁত, মাড়ি সহ মুখের নানা ক্ষতি হয় ধুমপানে।মুখের দূর্ঘন্দ সহ দাত ব্যাথা তৈরি করে ধুমপান।

দাঁত রক্ত পড়া সহ জটিল রোগ হয় ধুমপানে। 


৪/  কোলেস্টেরলের মাএা বাড়তে থাকে

ধূমপানের কারনে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাএা বাড়তে থাকে।ফলে  হার্টঅ্যাটাক সহ নানা জটিলতা দেহে তৈরি হয়ে অকাল মৃত্যু হতে পারে। 


৩/ধূমপান ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। 


ধূমপানের ফলে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়ে প্রতি বছরই অনেক মানুষ মারা যায়।


আর এই ফুসফুস রক্ষায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধূমপান ছেড়ে দেয়া। কারণ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সেই অবস্থা থেকে আবারও সুস্থ পরিস্থিতিতে ফিরে ফুসফুস। তবে অবশ্যই ধূমপান ছাড়তে হবে।

বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, শুধু ধূমপান ছাড়ার পরই ফুসফুসের সেই ক্ষমতা কাজ করে।

সিগারেটে থাকা হাজার ধরণের রাসায়নিক ফুসফুসের কোষের ডিএনএকে পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে সুস্থ থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষে পরিবর্তন করে।

সাম্প্রতিক গবেষণাটিতে প্রকাশিত হয়েছে যে ধূমপায়ীদের ফুসফুসে ক্যান্সারের উপস্থিতি পাওয়ার আগে থেকেই ফুসফুসের কোষ ব্যাপকহারে পরিবর্তিত হতে থাকে।

ধূমপায়ীদের শ্বাসনালী থেকে নেয়া কোষের অধিকাংশই ধূমপানের ফলে পরিবর্তিত হয়েছে বলে দেখা গেছে। কোনো কোনো কোষে ১০ হাজার পর্যন্ত জিনগত পরিবর্তনও লক্ষ করা গেছে।

"এই পরিবর্তনগুলোকে ছোট আকারের টাইম বোমার সাথে তুলনা করতে পারেন। পরবর্তী আঘাতের সাথে সাথেই হয়তো এটি ক্যান্সারে রুপান্তরিত হবে", ডক্টর কেট গাওয়ার্স নামের একজন গবেষক

 বলেন।

২/ধুমপান দেহে ক্যান্সার সেল তৈরি করে।

ফলে দেহের যেকোনো স্থানে যে কোনো ক্যান্সার হতে পারে। 


১/হৃদরোগের বা স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ধূমপান অনেক বেশি ঝুঁকি

ক্যান্সারের চেয়ে হৃদরোগের বা স্ট্রোকের ক্ষেত্রে ধূমপান অনেক বেশি ঝুঁকি তৈরি করে।

ধূমপান ধমনির ভেতরে দেয়ালকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে অ্যাথেরোমা নামক চর্বিজাতীয় পদার্থ সহজে জমা হয়। রক্ত হার্ট ও শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যায়, কিন্তু সিগারেটের ধোঁয়ার কার্বন মনোক্সাইডের কারণে এই অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটে।


সিগারেটের নিকোটিন শরীরে অ্যাড্রেনালিন উৎপাদনে সহায়তা করে। এতে হাটের স্পন্দন দ্রুত হয় এবং ব্লাডপ্রেশার বেড়ে যায়। এর ফলে হার্টকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। ধূমপানের কারণে রক্ত জমাট বাঁধারও সম্ভাবনা থাকে। এই সবকিছুই করোনারি হার্টের অসুখ, হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।








Post Navi

Post a Comment

0 Comments