উচ্চ রক্তচাপ (High Blood Pressure / Hypertension)
দেহের blood pressure যদি নরমালের চেয়ে বেশি হয় তবে
তাকে hypertension বা high blood pressure বলে।
Classification of hypertension:
i) Mild hypertension
(সিস্টোলিক প্রেসার 140-159)
(ডায়াস্টোলিক প্রেসার 90-99)
ii) Moderate hypertension
(সিস্টোলিক প্রেসার 160-179)
(ডায়াস্টোলিক প্রেসার 100-109)
iii) Severe hypertension
(সিস্টোলিক প্রেসার 108+)
(ডায়াস্টোলিক প্রেসার 110+)
বর্তমানে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হইয়াছে যে, দুইটি অন্যতম প্রধান কারণের ফলে অপরিহার্য রক্তচাপ বৃদ্ধি দেখা দেয়। এই দুইটি বিশিষ্ট কারণ হইল বংশগতি ও উদ্বেগ। মা-বাবা যদি দুইজনেই এই রোগে আক্রান্ত থাকেন তবে ছেলেমেয়েদের শতকরা ৭৫ জনের জীবনের এক সময় এই রোগ হইবার সম্ভাবনা থাকিয়া যায়। আর যদি দুইজনের যে কোন একজনের এই ব্যাধি থাকে তবে সন্তানদের শতকরা ৩০ জনের পরিণামে রক্তচাপ বৃদ্ধি ঘটিবে। মানসিক উদ্বেগ ও চাঞ্চল্য যখন বাহিরে প্রকাশিত না হইয়া সর্বক্ষণ মনকে উদ্বিগ্ন করিতে থাকে, তখন মনের উপর সেই ক্রমাগত উৎপীড়ন রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণ হইয়া দাঁড়াইতে পারে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগিতেছে এমন এক ব্যক্তি সুচিকিৎসায় আজ দীর্ঘ জীবন আশা করিতে পারে ।
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর যদি এই রক্তচাপ বেশী লক্ষ্য করা যায় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধির কারণগুলি যথা দীর্ঘস্থায়ী নেফরাইটিস, অ্যাডরিনাল গ্রন্থির টিউমার প্রভৃতির অনুপস্থিতি প্রমাণিত হয়, তাহা হইলে রোগ নির্ণয় নির্ভুলভাবে ধরা যাইতে পারে। একটি কথা সর্বদা স্মরণ রাখিতে হইবে যে ঔষধ উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি ভাল করিতে পারে না, পারে শুধু এমন এক পর্যায়ে আনিতে যাহা দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়।
Blood pressure বৃদ্ধির চিকিৎসায় রোগীকে কোন ঔষধের ব্যবস্থা দিতে হইবে তাহা রোগীর রক্তচাপের মাত্রা, স্থায়ীত্বকাল, প্রদর্শিত লক্ষণ এবং ভাবাবেগের প্রেক্ষাপটের উপর পুরাপুরি নির্ভরশীল।
লক্ষণ
১. মাথা ব্যথা হয় এবং চাপ ধরিয়া থাকে।
২.মাথার পিছনে ঘাড়ের রগ টানিয়া ধরে এবং ঘাড়ে ব্যথা হয়।
৩. মাথা ঘুরে এবং পড়িয়া যাইবার সম্ভাবনা থাকে।
৪.শরীরে অনিদ্রা, ক্লান্তি ও অবসাদ নামিয়া আসে।
৫.বেশী চাপ বাড়িলে রোগী অজ্ঞান হয় এবং অঙ্গহানি ঘটে।
৬. কানের মধ্যে ঝাঁ ঝাঁ করে।
৭.কোন কাজে মনোনিবেশে অক্ষমতা প্রকাশ পায় ।
৮. স্মরণ শক্তি হ্রাস পাইতে পারে।
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার কারণ
উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কারণটি সবসময় চিহ্নিত করা যায় না। তবে বিভিন্ন কারণে এই সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
1.ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া9.রাতে একটানা ৬-৮ ঘণ্টার চেয়ে কম ঘুমানো
10.বয়স পঁয়ষট্টি বছরের ঊর্ধ্বে হওয়া
11.পরিবারে বাবা, মা, ভাই-বোনের মত নিকট আত্মীয়দের হাই ব্লাড প্রেশার থাকা
সাধারণতঃ ২০ হইতে ৬০ বৎসর বয়স্ক লোকেরা উচ্চরক্তচাপে ভুগিতে থাকে। স্ত্রী-পুরুষ
সকলে এই রোগে আক্রান্ত হইয়া থাকে। বৃদ্ধ বয়সেও এই রোগে আক্রান্ত হইতে দেখা যায় । বেশী স্বাস্থ্যবান বা স্বাস্থ্যবর্তী লোকের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ অধিক পরিমাণে দেখা যায়। আমাদের ধারণা কোন ব্যক্তির শরীরে রক্ত বেশী থাকিলে তাহার রক্তচাপ অধিক হইবে। কিন্তু সবক্ষেত্রে উহা ঠিক নহে। একজন স্বাস্থ্যহীন বা রক্তহীন ব্যক্তিরও উচ্চরক্তচাপ রোগ থাকিতে পারে। অনেক সময় এই রোগ পিতৃ-মাতৃকুলের কাহারও ছিল এমন অনেক ইতিহাস জানা যায় ।
সাধারণত হাই প্রেসার এর বিশেষ কোনো লক্ষণ থাকে না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না তা বোঝার উপায় হলো নিয়মিত রক্তচাপ মাপা। রক্তচাপ মাপার ক্ষেত্রে রক্ত মাপার যন্ত্র দ্বারা দুইটি সংখ্যা রেকর্ড করা হয়—
সিস্টোলিক প্রেসার বা চাপ: দুটি রিডিং এর মধ্যে বড় সংখ্যা বা ওপরের মানটি হলো সিস্টোলিক চাপ। হৃৎপিণ্ড থেকে প্রতি স্পন্দনে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের সময়ে এই চাপ সৃষ্টি হয়।ডায়াস্টোলিক প্রেসার বা চাপ: রিডিং দুটির মধ্যে ছোট সংখ্যা বা নিচের মানটি হলো ডায়াস্টোলিক চাপ। রক্ত সঞ্চালনের বিরুদ্ধে রক্তনালীর বাধা থেকে এই চাপের সৃষ্টি।
রক্তচাপকে মিলিমিটার (পারদ) বা mmHg এককে মাপা হয়। ধরে নেওয়া যাক আপনার রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার (পারদ)। তাহলে সিস্টোলিক চাপ হবে ১২০ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ হবে ৮০।
মানুষের রক্তচাপ একে অপরের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। একজনের জন্য যেই রক্তচাপ বেশি বা কম, তা অন্যজনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হতে পারে। রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ থেকে ১২০/৮০—এই সীমার মধ্যে থাকে তাহলে তা স্বাভাবিক রক্তচাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ বলা হয় যদি—
রক্তচাপ সবসময় ১৪০/৯০ বা এর বেশি থাকে৮০ বছর বা তার অধিক বয়সীদের ক্ষেত্রে রক্তচাপ যদি ১৫০/৯০ বা এর বেশি থাকে
একজন সুস্থ লোকের রক্তের চাপ সিস্টোলিক (Systolic) ১১০ হইতে ১৪০ (মিলিমিটার) এবং ডায়াসটোলিক (Diastolic) ৭০ হইতে ৯০ (মিলিমিটার)। সোজা কথায়, মানুষের স্বাভাবিক রক্তের চাপ = ৯০+ বয়স। যদি কাহারো বয়স ৪৫ হয়, তাহা হইলে তাহার স্বাভাবিক প্রেসার হইবে ৯০ + ৪৫ = ১৩৫। ইহা হইল সিস্টোলিক প্রেসার। ডায়াস্টোলিক চাপ হইবে উহার চেয়ে ৪০/৫০ কম। ইহার উপরে রক্তের চাপ বাড়িলে। উহাকে, উচ্চ রক্তচাপ ধরা হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে B. P. (Blood Pressure) ও বাড়িতে থাকে। উত্তেজনা হইলে সিস্টোলিক প্রেসার বাড়ে, কিন্তু ডায়াস্টোলিক প্রেসার তত বাড়ে না।
ব্লাড প্রেসার দুই প্রকার :
১। এসেনসিয়াল হাইপারটেনশন (Essential Hypertension) ও
২। সেকেণ্ডারী হাইপারটেশন (Secondary Hypertension)
১। Essential Hypertension (কারণ অজানা উচ্চ রক্তচাপ) : ঊর্ধ্ব বয়স্ক লোকেরা এই রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। স্ত্রী-পুরুষ সমানভাবে এই রোগে আক্রান্ত হয়। সকল প্রকার রক্তচাপের মধ্যে এই প্রকারের রক্তচাপ শতকরা ৮০ ভাগ। ঊর্ধ্ব বয় লোকদের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ এই রোগে মারা যায়।
Essential Hypertension (এসেনসিয়াল হাইপারটেনশন) দুই প্রকার। (ক) Essential Benign (অমারাত্মক) Hypertension ।
(এসেনসিয়াল বিনাইন হাইপারেটনশন)
(খ) Essential Malignant (মারাত্মক) Hypertension
(এসেনসিয়াল মেলিগন্যান্ট হাইপারটেনশন) ।
(ক) Essential Benign Hypertension (অমারত্মক কারণ অজানা উচ্চ চাপ) ঃ এই রোগে ভোগা এমন কতকগুলি রোগী আছে যাহারা রক্তচাপ থাকা সত্ত্বেও কোন কষ্ট অনুভব করে না। আবার, এমন কতকগুলি রোগী আছে যাহাদের নিম্নোক্ত লক্ষণ প্রকাশ পায়।
১। ঘনঘন মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা থাকে।
২। সামান্য পরিশ্রমে বুক ধড়পড় করে
ও শ্বাস দ্রুত চলে।
৩। সকালে বমির ভাব হইতে পারে।
৪। সকালে আধকপাল মাথা
ব্যথা থাকে এবং উহা সারাদিন চলিতে থাকে।
৫। ইহাতে রক্তচাপ বেশী ঊর্ধ্বগামী হয়। হৃৎপিণ্ডের ব্যাঘাতের জন্য শরীরের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা কমিয়া গেলে রোগী অল্পতেই হাঁপাইয়া যায়। হাই ব্লাড প্রেসারে রোগী ভুগিতে ভুগিতে হঠাৎ একবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য প্যারালাইসিস হয়। ইহা কোন একটি অঙ্গ বা সমস্ত শরীরে হইতে পারে। অল্প রক্তক্ষরণের জন্য মুখের এক ধার বা হাত বা এক পা অথবা শরীরের অর্ধাংশ অকেজো হইতে পারে। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হইলে সমস্ত দেহে প্যারালাইসিস হয় বা অল্প সময়ে রোগী মারা যায়। ইহাকে সন্ন্যাস বা এপোপ্লেক্সি বলে ।
(খ) Essential Malignant Hypertension (মারাত্মক-কারণ অজানা উচ্চ রক্তচাপ) : এই রোগে আক্রান্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসা না চলিলে রোগীর অল্পদিনের মধ্যে প্রাণাশঙ্কা দেখা দেয়। সাধারণথঃ ২০ হইতে ৪০ বছরের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগে রক্ত নষ্ট হয় এবং ডায়াসটোলিক প্রেসারই ১০০ হইতে ১৬০ হয় বা ১৬০ পর্যন্ত হইতে পারে।
* চিকিৎসকের বিনা পরামর্শে উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ খাবেন না। ইহাতে আপনার বিপদ ঘটিতে পারে। আবার চিকিৎসকের বিনা পরামর্শে ঔষধ খাওয়া বন্ধ করিবেন না ইহাতেও বিপদ ঘটিতে পারে।
চিকিৎসা
১। রোগীর শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামের প্রয়োজন ।
২। সকল সময় রোগীর মানসিক শান্তি বজায় রাখা উচিত। কেননা, উত্তেজিত হইলে রক্তের চাপ বাড়ে।
৩। কোনক্রমেই রোগীকে রাগান্বিত করা উচিত নয়।
৪। সময়মত ঘুমানোর অভ্যাস গড়িয়া তুলিতে হইবে।
৫। অতিরিক্ত শোক, দুঃখ, আঘাত প্রভৃতি যেন মনে না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখিতে হইবে ।
৬। যাহাদের শরীরের ওজন বেশী তাহাদের ওজন কমানো উচিত।
৭। স্নেহ ও শর্করা জাতীয় খাদ্য খুব কম খাইতে হইবে।
৮। রক্তের উচ্চচাপ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকের নিকট হইতে ঔষধ লইয়া চাপ
কমাইতে হইবে।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত কিছু ঔষধ হলো—
এসিই ইনহিবিটর। যেমন: এনালাপ্রিল, লিসিনোপ্রিল ও র্যামিপ্রিল
অ্যানজিওটেনসিন ২ রিসেপ্টর ব্লকার। যেমন: ক্যান্ডেসারটান, ইরবেসারটান, ভ্যালসারটান ও ওলমিসারটান
ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার। যেমন: অ্যামলোডিপিন, নিফেডিপিন, ডিল্টিয়াজেম ও ভেরাপামিল
ডাইউরেটিক্স। যেমন: ইন্ডাপামাইড ও বেন্ড্রোফ্লুমেথায়াজাইড
বেটা ব্লকার। যেমন: এটেনোলল, মেটোপ্রোলল, ল্যাবেটালল, কার্ভেডিলল ও বিসোপ্রোলল
আলফা ব্লকার। যেমন: ডক্সাজোসিন
অন্যান্য ডাইউরেটিক্স। যেমন: স্পাইরোনোল্যাক্টোন ও অ্যামিলোরাইড
যে কাজটি কখনই করবেন না
শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করলে অনেকে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দেন, বা নিজে নিজে ডোজ কমিয়ে ফেলেন। এই কাজটি একেবারেই অনুচিত। এর ফলে প্রেসার বেড়ে গিয়ে স্ট্রোক, কিডনির রোগ, অন্ধত্বসহ বিভিন্ন জটিল ও জীবনঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।তাই নিয়মিত সঠিক ডোজে ঔষধ সেবন করা উচিত। ঔষধ সেবনের পাশাপাশি জীবনধারায় সুষম ও পরিমিত খাবার, ব্যায়ামের অভ্যাস, ধূমপান ত্যাগ—এসব স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে আসবে।
আসসালামু আলাইকুম,আমাদের অনলাইন Shop www.mimshopbd.com এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দের পোডাক্ট অর্ডার করুন,আমরা ক্যাশঅন ডেলিভারিতে পোডাক্ট দিয়ে থাকি।পোডাক্ট হাতে পেয়ে বিল পরিশোধ করতে পারেন। বিস্তারিত জানতে what’sup 01706462833
mobile app:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.bponi.site_mimshopbd&pli=1
0 Comments