কিডনী মানুষের শরীরের একটি মূল্যবান সম্পদ মানুষের শরীরের অপ্রয়োজনীয় ও দূষিত জলীয় পদার্থ শরীর হইতে ছাঁকিয়া বাহির করার জন্য যে যন্ত্রটি কাজ করে, তাহার নামই কিডনী। কিডনী রক্তকে পরিষ্কার করিয়া থাকে। আমরা যতই জলীয় পদার্থ পান করি না কেন, যতটুকু শরীরের প্রয়োজন ততটুকুই শরীরে রাখিয়া বাকি অংশ মৃত্ররূপে শরীর হইতে বাহির হইয়া যায়। যদি কোন কারণে শরীর হইতে ঐ সকল জলীয় পদার্থ বাহির হইতে না পারে, তাহা হইলে শরীরে শোথ দেখা যায়। শরীরের কোষের মধ্যে পানি জমিয়া যাইবে। ফলে কোষগুলির নিউট্রেশন বন্ধ হইয়া পচন দেখা দিবে। তখন মৃত্যু অনিবার্য।
কিডনী প্রদাহের ইংরেজী নাম নেফ্রাইটিস। কি কারণে কিডনী প্রদাহিত হয়,
নিম্নে তাহার কারণগুলি উল্লেখ করা হইল :
(১) অনেক সময় ডিপথেরিয়া হাম, টাইফয়েড জ্বর, বসন্ত, ম্যালেরিয়া,ইরিসিপেলাস, কলেরা, টাইফাস, আমাশয় প্রভৃতি পীড়ার পরেও নেফ্রাইটিস হইতে পারে।
(২) ভিজে বা স্যাঁত স্যাঁতে স্থানে বসবাস এবং অতিরিক্ত ঠাণ্ডা লাগিবার কারণে কিডনীতে রোগ দেখা দিতে পারে।
(৩) এ্যালকোহল এই রোগের অন্যতম কারণ হিসাবে বিবেচ্য।
(৪) অজীর্ণ রোগে আদার রস সেবনে কিডনীর রোগ হইতে পারে।
(৫) ম্যালেরিয়া জ্বর, সিফিলিস, যক্ষ্মা, স্কার্লেট বা আরক্ত জ্বর প্রভৃতি পীড়া হইতেও কিডনী প্রদাহ হইতে পারে।
(৬) আগুনে মারাত্মক ধরণের পুড়ে যাওয়ার ফলে কিডনী রোগ হইতে পারে।
(৭) বিভিন্ন ধরণের চর্মরোগকেও কিডনী প্রদাহের কারণ হিসাবে ধরা যাইতে পারে।
(৮) এ্যালকোহল, পারদ ইত্যাদির অপব্যবহার করিলেও কিডনী প্রদাহ হইয়া থাকে।
(৯) অতিরিক্ত আঘাত ও পরিশ্রমজনিত কারণেও কিডনী প্রদাহ হইতে পারে। এইগুলি ছাড়াও বহুবিধ জানা-অজানা কারণে কিডনী প্রদাহ হইতে পারে বা হইয়া থাকে। প্রস্রাব পরীক্ষায় পাসসেল বেশী পাওয়া গেলে এবং উহার চিকিৎসা না করিলে কিডনী প্রদাহ হইতে পারে। তরুণ কিডনী প্রদাহ ২ সপ্তাহ হইতে ২ মাস পর্যন্ত থাকিতে পারে বা ক্রণিক প্রদাহেও পরিণত হইতে পারে। তরুণ প্রদাহ হঠাৎ করিয়া শুরু হয় কিন্তু ক্রণিক প্রদাহ রোগীর অজান্তেই শুরু হয়।
(১) তরুণ প্রদাহে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর ১০৩/১০৪ পর্যন্ত জ্বর থাকিতে পারে এবং পিঠ হইতে কোমর পর্যন্ত খিচিয়া ব্যথা শুরু হয়।
(২) শরীরে রক্তহীনতা দেখা দেয়, গায়ের চামড়া শুকনো, খসখসে ও ফ্যাকাসে হয়।
(৩) রোগীর ক্ষুধাহীনতা প্রকাশ পায় ।
(8) শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয় এবং জ্বালাপোড়া বেশীর জন্য রোগী পেশাব করিতে খুব কষ্ট পায়।
(৫) মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা ও নাড়ীর গতি দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
(৬) রোগীর বমি বমি ভাব হয় বা ৰমন হইত পারে।
(৭) শোথ প্রথমে চোখের নীচের পাতা ও পায়ের গেঁটে দেখা দেয়।
(৮) ধীরে ধীরে শোথে রোগীর সমস্ত শরীর ফুলিয়া যায়।
ঠাণ্ডা লাগার কারণে কিডনী প্রদাহ হইলে রোগীর সর্বঙ্গ শরীরে শোধ দেখা দেয়।
শোখ বৃদ্ধি পাইলে প্রস্রাব কমিয়া যায়, আবার শোথ কমিয়া গেলে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তরুণ প্রদাহে প্রস্রাব একেবারেই বন্ধ হইয়া যাইতে পারে। প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পায় কিন্তু প্রস্রাব পরীক্ষায় প্রস্রাবের Specific Gravity (আপেক্ষিক গুরুত্) বৃদ্ধি পায়। প্রস্রাব পরীক্ষায় Albumin. Epithelium. Fattycast, Blood ইত্যাদি পাওয়া যায়। প্রস্রাবের তলানীতে R.BC ও W.B.C পাওয়া যায়। এইজন্য প্রস্রাবের রং লাল, ঘোলাটে আবার কখনো স্বাভাবিক থাকে। Pus cell বেশি হয়।
পুরাতন (ক্রোণিক) কিডনী প্রদাহের বেলায় রোগীর ক্ষুধামন্দা, আলস্যতা, অজীর্ণতা, অস্ত্রের গোলযোগ, উদরাময়, কোষ্ঠবদ্ধতা, আমাশয় ইত্যাদি হইয়া থাকে। সন্ধ্যায় পায়ের গোড়ালী ফুলিয়া উঠে এবং রাত্রে বৃদ্ধি পায়। Ascites plural Cavity- তে পানি জমে, অণ্ডকোষে পানি জমে, শোথে মুখমণ্ডল ভার দেখায়।
জটিলতা : কখনো কখনো পেরিকারডাইটিস, পেরিটোনাইটিস, পালমোনারী কনজেসশন, মেনিনজাইটিস, রেটিনাইটিস, নিউমোনিয়া ও হৃদরোগ ইত্যাদি হইতে পারে।
তরুণ কিডনী প্রদাহের বেলায় রোগী হঠাৎ আরোগ্যলাভ করিতে পারে। ঠাণ্ডা লাগার ফলে যদি কিডনী প্রদাহ হয়, তাহা হইলে অল্প সময়ে রোগী আরোগ্য লাভ করে। সাধারণত তরুণ কিডনী প্রদাহ ১/৬ সপ্তাহ স্থায়ী থাকে। যদি দুই মাস বা ততোধিক কাল স্থায়ী হয় তখন পুরাতন পীড়ায় আক্রান্ত হয়। পুরাতন কিডনী প্রদাহের ফলে অধিকাংশ রোগী মারা যায়। তবে অনেক রোগী সুদীর্ঘকাল রোগে ভোগার পর মারা যায়।
পরিক্ষা
1. Urine R/M/E
2. Renogramme
3. Blood Urea (15-40)
4. U.S.G of KUB
5. E.C.G
6. Creatinine: (8-1.5)
চিকিৎসা
১। ব্যথার তীব্রতার উপর নির্ভর করিয়া ঔষধ দিতে হয়। প্রচণ্ড ব্যথার জন্য Diclofenac Sodium (ডাইক্রোফিন্যাক সোডিয়াম) যুক্ত ঔষধ ঃ Inj.
Clofenac (ক্লোফিন্যাক) 75mg. বা Inj. Vurdon (ভারডন) 75mg, বা Inj- Voltaren (ভলটারেন) 75mg.
মাত্রা ঃ ১ টি করিয়া ইনজেকশন মাংসে ১২ ঘন্টা পর দিতে হয় ২ দিন। ব্যথা কম হইলে ইনজেকশন না দিয়া উপরের ঔষধের বড়ি দিতে হয় ১ Tab. Ultrafen (আলট্রাফেন) SR100mg,
মাত্রা:১ বড়ি করিয়া দিনে ৩ বার
ব্যাথার ঔষধের সাথে গ্যাসের ঔষধ দিতে হবে।
এন্টিবায়োটিক দেওয়া যায় তবে ডাক্তার দেখাইয়া খাওয়াতে হবে।
১। রোগীর তরুণ উপসর্গগুলি না কমা পর্যন্ত রোগীকে বিছানা হইতে উঠিতে দেওয়া এই।
২। রোগীর পায়ে যেন কোন প্রকার ঠাণ্ডা না লাগে সেই দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে হইবে ।
৩।রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ পান করার জন্য উৎসাহিত করিতে হইবে ।
৪। এই রোগের জন্য উত্তম পথ্য দুধ। দুধে এ্যালবুমিন আছে। দুধ পান করানোর আগে তাহা ভালভাবে ঝাঁকিয়া লইতে হয় । ইহাতে দুধ সহজে হজম হয়।
৫। রোগ সম্পূর্ণ আরোগ্য না হওয়া পর্যন্ত চা, কফি, এ্যালকোহল ও মসলা যুক্ত খাবার বন্ধ রাখিতে হইবে ।
৬। পানির সহিত লেবুর রস মিশাইয়া পান করিলে উপকার হয়। লেবুর রস ডাই- ইউরেটিক হিসাবে কাজ করে। প্রদাহ ও এ্যালবুমিন নিঃসরণ কমায়।
৭। রোগী আরোগ্য হইলে ১/২ মাস পর্যন্ত গোস্ত, ডাল ও ভাত খাওয়া চলিবে না । তবে পরে সিদ্ধ ডিম ও নরম ভাত দেওয়া যায়।
৮। কেবল দুধের উপর নির্ভর না করিয়া আলু, পটল, ডুমুর, মানকচু ইত্যাদির ঝোল ভাত দেওয়া যায় ।
৯। Ascorbic Acid (এসকরবিক এসিড) যুক্ত ঔষধ অর্থাৎ Tab. Vitamin-C ১টি করিয়া দিনে ৩ বার চুষিয়া খাইতে হয়।
১০। ৫/৭ দিন পর প্রস্রাব পরীক্ষা করিয়া পুনরায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা লইতে হয় ।
আসসালামু আলাইকুম,আমাদের অনলাইন Shop www.mimshopbd.com এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার পছন্দের পোডাক্ট অর্ডার করুন,আমরা ক্যাশঅন ডেলিভারিতে পোডাক্ট দিয়ে থাকি।পোডাক্ট হাতে পেয়ে বিল পরিশোধ করতে পারেন। বিস্তারিত জানতে what’sup 01706462833
mobile app:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.bponi.site_mimshopbd&pli=1
উপরের buy now click;করলে সাইট পেয়ে যাবেন
0 Comments